সম্পাদকীয়: ‘যতোদিন রবে পদ্মা মেঘনা গৌরী যমুনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজ জন্মবার্ষিকী।
দিনটি আজ রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, বিশেষ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে স্মরণীয় করতে বাঙালি জাতির জন্য এ এক অবিস্মরণীয় দিন। তিনি এমন এক নেতা যিনি বাঙালিকে দিয়েছেন একটি দেশ, পতাকা ও মানচিত্র। তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি।
১৯২০ সালের আজকের দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন স্বাধীনতার স্থপতি। তার অসাধারণ নেতৃত্বের গুণে তিনি কেবল বাংলার অবিসংবাদিত নেতা হিসেবেই পরিগণিত হননি, নিজেকে তিনি নেতৃত্বের এমন এক উচ্চতায় সমাসীন করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে একাত্তরে অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা তার নাম বলতে বলতেই দেশের জন্য অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। একাত্তরের ২৫ মার্চের কাল রাতে পাকবাহিনী তাকে ধরে নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে কারাবন্দী করে। কিন্তু তার নামেই পরিচালিত হল মুক্তিযুদ্ধ। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে অবশেষে বাঙালি পেল দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বাধীনতা। যে স্বাধীনতার জন্য ‘৫২এর ভাষা আন্দোলন, ৬৬ এর ৬ দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে ধীরে ধীরে তৈরি করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ এই দিনটি শিশু দিবস হিসেবে সরকারিভাবে পালন করা হয়। ২০০১ সালে চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়নি। তবে দলীয় ও বেসরকারিভাবে উদযাপিত হয়েছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতাসীন হলে এই দিনটিও আগের মতো যথাযথ মর্যাদায় উদযাপিত হয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটিকে শিশুদিবস হিসেবে পালন করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তার বিশ্বাস ছিলো আজকের শিশুই আগামীদিনের ভবিষ্যৎ। আগামীতে দেশ গড়ার নেতৃত্ব তাদের হাতেই। শিশুরা জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, মর্যাদা ও মহিমায় সমৃদ্ধ হোক-
এটাই ছিলো তার একান্ত চাওয়া।
শিশুরা যাতে সুষ্ঠু স্বাভাবিক উপায়ে বেড়ে উঠতে পারে সেটি নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরী। তাদেরকে আগামী দিনের সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে বেড়ে উঠার সুযোগ করে দিতে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন শিশু দিবস হিসেবে পালনের সার্থকতা। বঙ্গবন্ধুর জীবনও শিশুদের জন্য তো বটেই সবার জন্যই এক শিক্ষণীয় বিষয়। তার অপরিসীম ত্যাগ ও তিতিক্ষার জন্য আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। স্বাধীন জাতি হিসেবে
বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছি। দেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি যেমন আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন তেমনি দেশের জন্য জীবন দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি।
তাই বাঙালি জাতি চিরকাল শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তাকে স্মরণ করবে।
স্বাআলো/এসআর