শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধের আহবান জানালেন রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে কেউ কেউ কোচিংয়ের রমরমা ব্যবসা করে যাচ্ছেন। যেটা শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার শিক্ষা থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। আপনাদের এ কোচিং ব্যবসা পরিহার করতে হবে এবং কোচিং বাণিজ্য বন্ধের আহবান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অভিভাবকদেরও সন্তানকে কোচিংয়ে দেয়ার আগ্রহ কমাতে হবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, শুধু জিপিএ-৫ পাওয়ার জন্য অভিভাবকরা তাড়াহুড়ো করে সন্তানকে একটা ভালো কোচিংয়ে দেন। তারা মনে করেন যে, এ কোচিংয়ের মাধ্যমে তাদের সন্তানকে গুণগত বা ভালো শিক্ষা দিতে পারবো। কিন্তু ঘটছে উল্টো। এ মানসিকতা থেকে সরে আসতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের যে অভিভাবকরা জিপিএ-৫ পেলে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান, আপনারা যদি মনে করেন সন্তানকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে, বাস্তব শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে, তাহলে এ ধরনের কোচিংয়ে পড়ানোর অবস্থান থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন। শিক্ষকদের কাছেও আমার আহবান থাকলো কোচিং ব্যবসা পরিহার করুন।

সমাজের ভিত্তি নির্মাণে শিক্ষকরাই মূল প্রকৌশলী উল্লেখ করে সাহাবুদ্দিন বলেন, পৃথিবীর যতো উল্লেখযোগ্য অর্জন, গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার, আধুনিক সভ্যতা গঠন- সবকিছুর পেছনে কোনো কোনো শিক্ষক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা রেখে চলেছেন। শিক্ষকরা শুধু শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক দিকটাই দেখেন না, মানবিক মূল্যবোধ, সততা, দেশপ্রেমবোধ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখেন। সমাজ গঠন ও সমাজের ভিত্তি নির্মাণে শিক্ষকরাই মূল প্রকৌশলী।

শিক্ষকদের মর্যাদার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষকরা হলেন শিক্ষিত সমাজের বিবেক। জাতি গঠনের এ কারিগররা অক্লান্ত পরিশ্রম ও পরম যত্নে জ্ঞান বিতরণের মাধ্যমে বৃদ্ধিবৃত্তিক ও নৈতিক সমাজ গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় শিক্ষকতা এখনো অন্য যেকোনো পেশার তুলনায় অনেক ঊর্ধ্বে। তারপরও আজকাল সামাজিক যে অবক্ষয় ঘটেছে, তাতে শিক্ষকদের অমর্যাদা ও অসম্মানিত হতে হচ্ছে। যেটা অত্যন্ত কষ্টের, দুঃখের।

রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, একটা সময় ছিলো- যখন রাস্তায় যদি আমরা শিক্ষককে দেখতাম, মূল রাস্তা থেকে ছোট গলির রাস্তায় দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করতাম। শ্রদ্ধা করে এটা করতাম। আজকাল যেটা দেখি- শিক্ষক সামনে আসছেন, তার সামনেই শিক্ষার্থী সিগারেট টানতে টানতে চলে যাচ্ছে। কোনো রকম সম্মান বোধটাও থাকছে না।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। অনুষ্ঠানে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং শিক্ষকরা অংশ নেন।

স্বাআলো/এস

Share post:

সাবস্ক্রাইব

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

সর্বাধিক পঠিত

আপনার জন্য প্রস্তাবিত
Related

জনগণ এখন মর্যাদা নিয়ে বিশ্ব দরবারে চলতে পারে: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা অফিস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আব্দুল হাইয়ের মতো...

খুলনাসহ চার বিভাগে আরো ২ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি

ঢাকা অফিস: সদ্যই শেষ হলো মৌসুমের সবচেয়ে উত্তপ্ত মাস...

উপজেলা নির্বাচন: তৃতীয় ধাপে মনোনয়ন জমা দিলেন ১৫৮৮ প্রার্থী

ঢাকা অফিস: আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের...

আমি চাইলে আমেরিকার স্টাইলে পুলিশ দিয়ে আন্দোলন থামিয়ে দিতে পারি: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা অফিস: দেশের বামপন্থি রাজনীতিবিদরা ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে...